-10%

Kaha Gele Toma Pai / কাঁহা গেলে তোমা পাই

ডঃ জয়দেব মুখোপাধ্যায়ের “কাঁহা গেলে তোমা পাই” শ্রী চৈতন্যদেবের মৃত্যু রহস্যের উপরে লেখা একটা ঐতিহাসিক গ্রন্থ বলা যেতে পারে। যদিও গ্রন্থটি অসমাপ্ত, তবুও প্রথম খন্ডটি পড়লেই বোঝা যায়, কতটা গবেষণা করে ডঃ মুখোপাধ্যায় এটি রচনা করেছিলেন। বলা যায়, “কাঁহা গেলে তোমা পাই” একটি গবেষণাধর্মী উপন্যাস যেখানে একই সাথে আছে চৈতন্যদেব অন্তর্ধান রহস্যানুসন্ধান এবং ইতিহাসের ব্যাখ্যা। তবে এই সমস্ত কিছুই সাধিত হয়েছে আনন্দ নামের এক যুবকের মাধ্যমে যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ নীহার রঞ্জন রায়ের চৈতন্যদেব সম্পর্কিত একটি বই পড়ে অনুসন্ধিৎসাবশত জগন্নাথ এক্সপ্রেস ধরে পুরীতে যাত্রা করে।
আনন্দের আড়ালে লেখক ডঃ মুখোপাধ্যায় দেখিয়েছেন, চৈতন্যদেবকে নিয়ে বই এর অভাব নেই। বৃন্দাবন দাস থেকে শুরু করে লোচন দাস, কৃষ্ণদাস কবিরাজ, দিবাকর দাস, অচ্যুতানন্দ দাস অনেকেই লিখেছেন চৈতন্যজীবনী। কিন্তু তাঁর অন্তর্ধান নিয়ে সবাই যেন কেমন নীরব! কবি জয়ানন্দ তাঁর “চৈতন্যমঙ্গল” কাব্যে লিখেছেন, রথযাত্রার সময় নাচতে গিয়ে বাঁ পায়ে এমনই জখম হন মহাপ্রভু, যার ফলস্বরূপ ধনুষ্টংকার হয়ে তোটা গোপীনাথে তিনি মারা যান যদিও মৃতদেহ সমাধিস্থ করা হয়নি। আবার শ্রী বৈষ্ণবচরণ দাস তাঁর ওড়িয়া গ্রন্থ “চৈতন্য চাকড়া”তে লিখেছেন সম্পূর্ণ অন্য কথা। লিখেছেন, গোবিন্দ বিদ্যাধরের এক ষড়যন্ত্রের কথা যার ফলস্বরূপ মহাপ্রভুকে শিকার হতে হয়। প্রায় একই কথা প্রতিফলিত হতে দেখা যায় ডঃ দীনেশ সেনের “চৈতন্য এন্ড হিজ এজ” গ্রন্থে। ডঃ নীহার রঞ্জন রায়ও অনেক অনুসন্ধান করেছেন এই নিয়ে। তিনি গবেষণা করে জেনেছেন, মাতৃ আজ্ঞা পালন করতেই পুরীতে যান মহাপ্রভু এবং তখন পুরীতে জগন্নাথদেবের স্নান-রথ বা পূজাবিধির জন্য শবর সর্দার বিশ্বাবসুর অব্রাহ্মণ বংশধররা ছিলেন। তাহলে কি কোনো কারনে তাদের সাথে সংঘাত বাঁধে মহাপ্রভুর? না কি, বিরোধ বাঁধে উৎকল সৈন্যবাহিনীর যার জন্য বলিপ্রদত্ত হতে হয় মাত্র সাতচল্লিশ বছর বয়সী গৌরাঙ্গকে? অবশ্য ডঃ রায় উড়িয়েও দেননি বৌদ্ধভিক্ষুদের সাথে মহাপ্রভুর সংঘাতের বিষয়টিকেও।
তবে শুধু উপন্যাস হিসাবেই নয়, এই বইটি থেকে জানা যায় বিভিন্ন ঐতিহাসিক তথ্যও। শ্রীচৈতন্যদেবের অন্তর্ধান রহস্য আজও কাটেনি। অনেক ইতিহাসজ্ঞ দাবী করেছেন, তিনি অমৃতলোকে যাত্রা করেন জগন্নাথ মন্দিরে। আবার অনেকেই বলেন, তোটা গোপীনাথে উনি দেহত্যাগ করেন ধনুষ্টংকারে। আবার জগন্নাথদেবের শরীরে লীন হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও অনেকে মনে করেন। তবে এটাতে একমত সবাই যে, বিকেল চারটা থেকে রাত এগারোটার মধ্যে শ্রীচৈতন্য অন্তর্ধান হন। কিন্তু আসল সত্য যে কি, সেই নিয়ে ধোয়াশা কাটেনি এখনো।
যতটুকু জানি, লেখক ডঃ জয়দেব মুখোপাধ্যায় এই নিয়ে গবেষণা করছিলেন বহুদিন। হয়তো সত্যের কাছাকাছিও ছিলেন। কিন্তু “কাঁহা গেলে তোমা পাই” প্রকাশিত হওয়ার পরেই ১৯৯৫ সালের ১৭ ই এপ্রিল লেখক ও তাঁর মা বিমলা মুখোপাধ্যায়কে পুরীতে আনন্দময়ী মায়ের আশ্রমের বাথটবের মধ্যে কোনো অজ্ঞাত কারনে খুন করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় দ্বিতীয় খণ্ডের পাণ্ডুলিপিও। প্রথম খন্ড লেখার পরই লেখক ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তিনি খুন হতে পারেন এবং বাস্তবে সেটাই হয়।
এক কথায়, বইটি অসাধারণ। যারা শ্রীচৈতন্যদেবের অন্তর্ধান নিয়ে পড়তে চান, অবশ্যই পড়তে পারেন এই বইটি।

Out of stock

180.00

Additional information

Weight 200 g

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.