Kashidhame Aajo Ghote Aghatan / কাশীধামে আজো ঘটে অঘটন

ভারতবর্ষ হল পৃথিবীর অধ্যাত্মজগতের প্রাণকেন্দ্র। এই উপমহাদেশের দিকে দিকে ছড়িয়ে আছে কত অগণিত তীর্থ। প্রতিটি তীর্থেরই রয়েছে আপন আপন মাহাত্ম; প্রতিটি তীর্থেই যুগে যুগে ঘটে গেছে কত অমৃতময় ঐশীলীলা। এই ঐশীলীলার প্রয়োজন মানুষের জীবনে অনঃস্বীকার্য্য। এই লীলার মাধ্যমেই যে পরমেশ্বর জানান দেন তাঁর উপস্থিতি এবং এরই মধ্য দিয়ে জীবকে আকর্ষণ করেন ভক্তির জগতের দিকে।
প্রশ্ন উঠতে পারে – সমস্ত পৃথিবী তথা জীবজগতই তো পরমেশ্বরের ব্যক্ত রূপ এবং সর্বভূতেই বিরাজ করছেন তিনি। তবে বেছে বেছে বিভিন্ন তীর্থক্ষেত্রেই তাঁর অধিকাংশ লীলার স্বাদ পাওয়া যায় কেন? উত্তরে সবিনয়ে বলব – বাতাসের উপস্থিতি তো সব স্থানেই থাকে। কিন্তু তা ভালভাবে অনুভব করতে হলে পাখার প্রয়োজন পড়ে। তীর্থক্ষেত্রগুলি হল সেই পাখার মত। যুগে যুগে সেখানে নিত্য চলতে থাকা যাগযজ্ঞ, নিত্য পূজা ও আরাধনার মন্ত্রোচ্চারণের সূক্ষ্ম অনুরণণ যে সেখানকার আবহমণ্ডলের প্রতিটি অনুকণার মাঝে এক অপূর্ব দিব্যভাব সঞ্চার করে দেয়। তাই সেই দিব্য পরিবেশ ঐশীলীলা সংগঠনের ক্ষেত্রেও বিশেষ সহায়তা করে।

কাশীধাম হল এমনই এক মহাতীর্থ। পুরাণ বলে – এই মহাতীর্থ জগতের আদিমতম ক্ষেত্র। কথিত আছে – জগৎ সৃষ্টির পূর্বে স্বয়ং বিশ্বনাথ আপন ত্রিশূলের উপর এই সুরম্য নগরী নির্মান করেন। তাই পৃথিবীর অন্তর্ভুক্ত হয়েও এই স্থান পৃথিবী বহির্ভূত। এখানকার সর্বময় কর্তা বিশ্বেশ্বর বিশ্বনাথ। আর বিশ্বনাথ হলেন অবিমুক্তেশ্বর। জীবের পরম মুক্তিদাতা। তাই কাশীধামে মৃত্যুর অন্য নাম হল মহামুক্তি। এখানে যে জীবেরই মৃত্যু হয় সেই বিশ্বনাথের কৃপায় লাভ করে ভববন্ধন থেকে পরম মুক্তির আনন্দময় আস্বাদ। পরম মুক্তিতীর্থ এই কাশীধামে বাবা বিশ্বনাথ ও মা অন্নপূর্ণার লীলা তো যুগযুগান্তর ধরে চলে আসছে। যুগে যুগে কত জ্ঞানী, যোগী এবং ভক্ত লাভ করেছেন তাঁদের ঐশীলীলার অমৃত আস্বাদ। এই অমৃতের স্বাদ তাঁদের দেখিয়েছে ভববন্ধন থেকে মুক্তির উপায় – জীবত্ব থেকে শিবত্বে উত্তরণের পথ।

আজো কাশীধামে নিত্য প্রবাহিত হয়ে চলেছে এই ঐশীলীলার স্রোতধারা। সেই অমৃতধারার স্পর্শে আজো কত মহাত্মা লাভ করছেন ইষ্টকৃপার আনন্দময় অনুভূতি যা তাঁদের দেখিয়ে দিচ্ছে মহামুক্তির দিশা। তাঁদেরই একজন সনাতনভাই। ২০০১ সালে এক অপূর্ব অঘটনের মাধ্যমে তাঁর সান্নিধ্যে আসার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। শুধুমাত্র গুরুর নির্দেশপালন এবং ইষ্টের উপর অটল শরণাগতি একজন ভক্তকে যে মহাসিদ্ধির কোন স্তরে নিয়ে যেতে পারে তার প্রকৃষ্টতম উদাহরণ এই সনাতনভাই। বিন্ধ্যাচল দর্শনে গিয়ে জামশেদপুরের বিশিষ্ট চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট সনাতন মুখোপাধ্যায়ের মধ্যে যে পরিবর্তনের সূত্রপাত ঘটে তার পূর্ণতা তিনি লাভ করেন কাশীধামে আকাশবৃত্তির সাধনার মধ্য দিয়ে। আকাশবৃত্তির কঠোরতম শরণাগতির সাধনা তাঁকে যোগায় ইষ্টলাভের দিশা। এই মহাত্মার কাশীধামে সাধনা, সিদ্ধি ও মুক্তির দিব্য অভিজ্ঞতার বিবরণই এই গ্রন্থের মূল বিষয়। আজো যে মুক্তিতীর্থ কাশীধামে সবার মাঝে থেকেও নিভৃতভাবে ঐশীলীলার অমৃত আস্বাদ করা যায় সেই দিব্য অভিজ্ঞতার অপূর্ব বিবরণ সকলের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্যই আমার এই গ্রন্থ রচনার উদ্যোগ।

সেইসাথে কাশীধামের পৌরাণিক তথা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটও তুলে ধরা হয়েছে এই গ্রন্থে। একইসঙ্গে কাশীধামের সকল প্রমুখ মন্দিরের মাহাত্ম্য, সেখানকার সকল ঘাটের বিবরণ এবং সেখানে আগত বিভিন্ন মহাত্মার অতীন্দ্রিয় অনুভূতিও উপস্থাপন করা হয়েছে এই গ্রন্থে।

In stock

80.00

Additional information

Weight 200 g

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.