Kkhanik Khnoje Chirontan (Nashik-Shiradi-Darka-Probhas Parbo) / ক্ষণিক খোঁজে চিরন্তন ( নাসিক-শিরডি-দ্বারকা-প্রভাস পর্ব )

অসীম করুণাময় দ্বারকাধীশ শ্রীকৃষ্ণ, অপার আনন্দঘন দেবাদিদেব সোমনাথ, অনন্ত কৃপাময় মর্য্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরামচন্দ্র, জগৎসংসারের ন্যায়চক্রের অধিশ্বর সূর্য্যপুত্র শনিদেব এবং দত্তাত্রেয় ভগবানের অবতারস্বরূপ ভক্তবৎসল শিরডির সাইবাবার আশীর্বাদে “ক্ষণিক খোঁজে চিরন্তন” গ্রন্থের দ্বিতীয় পর্বটি প্রকাশিত হল।
আমরা প্রত্যেকেই অমৃতের সন্তান। তাই মৃত্যু থেকে অমৃতের ঠিকানার লক্ষ্যেই আমাদের পথ চলতে হয়। ক্ষণিক জীবনের লক্ষ্যই হল চিরন্তনের সন্ধান। কিন্তু চিরন্তনকে লাভ করার পথে মায়ার সংসার আমাদের পথে ছড়িয়ে দেয় মোহের মায়াজাল। তবেই একমাত্র মায়ার চক্রব্যুহ ভেদ করে পৌঁছানো যায় চিরন্তনের সমীপে।

ক্ষণিক জীবনকে চিরন্তনের সাথে একাত্ম করে তোলার জন্য নিজেকে নানাভাবে প্রস্তুত করতে হয়। সেই প্রস্তুতির মুখ্য উপায় হল সাধুসঙ্গ ও সৎপ্রসঙ্গ আলোচনা, তীর্থদর্শন এবং সদ্গ্রন্থপাঠ। ভারতবর্ষের মহাতীর্থের অমৃতপথে বেরিয়ে অনেক সাধুদর্শনেরই সৌভাগ্য আমার হয়েছে। তাঁদের সাথে অধ্যাত্ম-আলোচনা আমায় বিরাটভাবে সমৃদ্ধও করেছে। তাইতো আমার লেখনীতে তাঁদের অমৃতময় সান্নিধ্যের কথাই আমি তুলে ধরার চেষ্টা করি – তাঁদের সান্নিধ্যে এসে যে অমৃত আমি অন্তরে লাভ করেছি তা ভাগ করে নিতে চাই আমার সুপ্রিয় পাঠক-পাঠিকাদের সাথে।

আমার “ক্ষণিক খোঁজে চিরন্তন” গ্রন্থের প্রাণপুরুষ হলেন ইচ্ছামৃত্যুসম্পন্ন মহাসাধক রুদ্রানন্দজী। মধ্যপ্রদেশে তাঁর সাথে আমার প্রথম দেখা হয়। এই মহাসাধক আপন যোগবিভূতির মাধ্যমে জন্ম-মৃত্যু চক্রের বাঁধন অতিক্রম করে গিয়েছিলেন। তাই আগে থাকতেই তিনি নিজের মৃত্যুদিন ঘোষণা করে দিয়েছিলেন আর তারপর জীবনের শেষ কয়টি দিন ভারতবর্ষের মহাতীর্থগুলি পর্য্যটন করে কন্যাকুমারীতে সমাধিযোগে দেহত্যাগ করেছিলেন ২০০৫ সালের ১৫ই ডিসেম্বর। মূলতঃ তাঁর অমৃতসঙ্গে কাটানো দিনগুলি নিয়েই রচিত হয়েছে তিন পর্বে সমাপ্ত এই গ্রন্থ। তাঁর সঙ্গ করাকালীন তাঁর অমৃতজীবনের যেসব অতীন্দ্রিয় অপার্থিব অভিজ্ঞতা শ্রবণ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে সেইসবই আমি তুলে ধরেছি এখানে। সেইসঙ্গে যুক্ত হয়েছে তাঁর সাথে তীর্থদর্শনের বিরল অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ।

“ক্ষণিক খোঁজে চিরন্তন” গ্রন্থের এই “নাসিক-শিরডি-দ্বারকা-প্রভাস পর্ব”- তে বর্ণিত হয়েছে লেখকের সমগ্র নাসিক, জ্যোতির্লিঙ্গ ত্র্যম্বকেশ্বর, হনুমানজীর জন্মভূমি অঞ্জনপ্রদেশ, সাইবাবার কৃপাধন্য শিরডি, শনিদেবের অলৌকিক ধাম শনি শিঙ্গনাপুর, শ্রীকৃষ্ণের স্মৃতিধন্য দ্বারকা-প্রভাস, দ্বারকার নাগেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ আর প্রভাসের সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন এবং রুদ্রানন্দজীর তপোভূমি গির্ণার ভ্রমণের বৃত্তান্ত। প্রতিটি তীর্থের নিখুঁত ভৌগোলিক বর্ণনার সাথে সাথে সেখানকার পৌরাণিক মাহাত্ম্য, ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং আধ্যাত্মিক পটভূমিও বিবৃত হয়েছে যাতে আমার পাঠক-পাঠিকারা ঘরে বসেই এসব মহাতীর্থে মানসভ্রমণের স্বাদ নিতে পারেন।

তবে সর্বোপরি এই গ্রন্থে প্রাধান্য পেয়েছে মহাত্মা রুদ্রানন্দজীর মহাজীবনের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার ঝাঁপি। ইতিপূর্বে “মধ্যপ্রদেশ পর্ব”তে ভ্রমণের ফাঁকে ফাঁকে বর্ণিত হয়েছিল- কিভাবে তিনি খুঁজে পেয়েছিলেন অধ্যাত্মপথের দিশা, কিভাবে তিনি পেয়েছিলেন গুরুর সন্ধান, কিভাবে তিনি লাভ করেছিলেন সিদ্ধির পরশ। এই গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে তাঁর সিদ্ধিলাভের পরের কিছু অপার্থিব দর্শনের কথা। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্য স্থূল দ্বারকার বুকে তাঁর অলৌকিকভাবে শ্রীকৃষ্ণের স্বর্ণদ্বারকার সূক্ষ্মরূপ দর্শন এবং তপোভূমি গির্ণারের দত্তাত্রেয় পীঠে তাঁর জ্যোতির্ময় মহাত্মাদের দর্শনের বিবরণ। এককথায়, মহাত্মা রুদ্রানন্দজীর ক্ষণিক থেকে চিরন্তন হয়ে ওঠার অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে উপরোক্ত সকল মহাতীর্থ দর্শনের সাথে সাথে; সেইসঙ্গে দেখানো হয়েছে- মৃত্যুর পূর্বমুহুর্ত পর্যন্ত জীবনকে কেমন যথাযথভাবে উপভোগ করে রুদ্রানন্দজী বুঝিয়ে দিয়েছেন যে মৃত্যু জীবনের শেষ নয়, শুধু জীবন থেকে মহাজীবনে উত্তরণের পথের ক্ষণিক বিরামমাত্র।

আধ্যাত্মিক জগতের ধ্রুবতারাস্বরূপ মহাত্মা রুদ্রানন্দজীর এই জীবনদর্শন এবং তাঁর সাধনলব্ধ অভিজ্ঞতা ও উপদেশ আমাদের প্রত্যেককেই আলোর পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করবে বলেই আমার বিশ্বাস। তাইতো তাঁর অমৃতসঙ্গের মাধ্যমে যে অপার তৃপ্তি ও অসীম আনন্দ আমি হৃদয়ে আস্বাদ করেছি তথা তাঁর সাথে বিভিন্ন তীর্থদর্শনের যে বিরল অভিজ্ঞতা আমি জীবনে লাভ করেছি সেই আনন্দময় অভিজ্ঞতা আমার পাঠক-পাঠিকাদের সাথে ভাগ করে নেয়ার জন্যই রচিত হল এই গ্রন্থ।

In stock

90.00

Additional information

Weight 250 g

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.