MAHASINDHUR OPAR THEKE / মহাসিন্ধুর ওপার থেকে

আদি অন্ত দিগন্ত বিহীন এই অনন্ত মহাবিশ্ব। এই পার্থিব জগৎ তারই অপূর্ব ক্ষুদ্র নিদর্শন। জীবন থেকে মহাজীবনের পথে এই জন্ম-মৃত্যু-ময় পার্থিব জগৎ এক আশ্চর্য্য সুন্দর বিরামক্ষেত্র। সুখ, দুঃখ, হাসি, কান্না, রোগ, শোক, মৃত্যু, জরা সব একাকার হয়ে গিয়েছে এই মৃত্যুলোকে। তাই এই পৃথিবীই একদিকে যেমন কর্মের ক্ষেত্র, আরেকদিকে তেমনই মুক্তির ক্ষেত্র। কর্মের মধ্য দিয়ে যেমন এখানে জন্ম জন্মান্তরের যাত্রা শুরু হয় তেমনই সত্য, জ্ঞান, প্রেম, ভক্তি ও ত্যাগের মধ্য দিয়ে ঘটে চিরমুক্তি। পৃথিবীতে আসা যাওয়ার চক্র থেকে যাঁরা চিরমুক্তি লাভ করেন, তাঁরা অনন্তকাল ধরে ঊর্দ্ধ সপ্তলোকে চির আনন্দে চির অমৃতের মাঝে শাশ্বত জীবনযাপন করেন। পার্থিব জগতের জন্ম, মৃত্যু, হাসি, কান্না, পাপ, পুণ্য যেমন প্রত্যক্ষ সত্য তেমনই মৃত্যুর ওপারে যে আনন্দময় অমৃতময় ঊর্দ্ধ সপ্তলোক ( ভু, ভুবঃ, স্বঃ, মহঃ, জনঃ, তপো, হিরণ্য) এবং তারও ঊর্দ্ধে যে ব্রহ্মলোক ও পরব্রহ্মলোক রয়েছে তাও তেমনই ধ্রুব সত্য। এই দুই জগতের সাথে প্রতিটি প্রাণীর আত্মিক সংযোগই ইহলোক ও পরলোকের মাঝে সেতুবন্ধন করেছে।
মৃত্যুর ওপারে সাতটি লোকে বিভিন্ন ধরণের আত্মার জন্য বিভিন্ন ধরণের স্তর নির্দিষ্ট রয়েছে। সেখানে নীচু স্তরে যেমন পাপীরা মৃত্যুলোকে করে আসা পাপের শাস্তি ভোগ করে, তেমনই পুণ্যবানরা ভোগ করেন তাঁদের পুণ্যফল। ভুলোক এবং ভুবঃলোকের মধ্যেই এই কর্মফলভোগের স্তর নির্দিষ্ট রয়েছে। তারপর থেকে শুরু হয়েছে অনন্ত কর্মের ক্ষেত্র। মহাত্মাদের এই কর্মক্ষেত্র শুরু হয়েছে স্বলোক থেকে এবং মহঃলোক, জনঃলোক ও তপোলোক জুড়ে রয়েছে এই কর্মক্ষেত্র। এইসব লোকে যেসব মহাত্মারা রয়েছেন ঈশ্বরের নির্দেশে তাঁরাই নিয়ন্ত্রণ করেন জীবজগৎ ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছু।

আবার এই পৃথিবীতেও অনেক উচ্চকোটির সিদ্ধযোগী রয়েছেন যাঁরা পৃথিবীতে স্থূলদেহে বাস করলেও একইসাথে সূক্ষ্মদেহে ঊর্দ্ধলোকেও বিচরণ করেন। যাঁরা ক্রিয়াযোগে সিদ্ধ তাঁদের কাছে এ অতি সাধারণ ব্যাপার।

ভারতীয় যোগসাধনার একটি বিশেষ পথের নাম ক্রিয়াযোগ যে পথে সিদ্ধিলাভ করলে সাধক অনায়াসে দেহ থেকে দেহাতীতে যেতে পারেন। সিদ্ধ ক্রিয়াযোগী একসাথে একাধিক দেহে যেমন থাকতে পারেন তেমনই ইহলোকে নিভৃতস্থানে স্থূলদেহ রেখে সূক্ষ্মদেহধারণ করে ঊর্দ্ধলোকের বিভিন্ন স্তরে গিয়ে জ্যোতির্ময় দেহধারী মহাত্মাদের সাথে সাক্ষাৎ ও ভাববিনিময় করে আবার ফিরে আসতে পারেন স্থূলদেহে।

এই ক্রিয়াযোগে সিদ্ধ এক যোগীর দেহ থেকে দেহাতীতে গিয়ে ঊর্দ্ধলোক দর্শনের কাহিনীই হল ‘মহাসিন্ধুর ওপার থেকে’-র বিষয়বস্তু। এই গ্রন্থের কেন্দ্রীয় চরিত্র নিশীথ কোন কাল্পনিক ব্যক্তি নয়, সে ছিল আমার ছেলেবেলার বন্ধু তথা স্কুলজীবনে আমার একাধারে friend, philosopher ও guide.

In stock

80.00

Additional information

Weight 200 g

Reviews

There are no reviews yet.

Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.