Pujarini / পূজারিনি
শেষবারের মত মঞ্চে উঠেছিলেন নটি বিনোদিনী।
মুখে ছিল মন্ত্র: ” হরি গুরু, গুরু হরি।”
শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মৃত্যু 16 অগাস্ট 1886. তার ঠিক 130 দিন পর বঙ্গনট্টমঞ্চের নক্ষত্র বিনোদিনীর অকাল অবসর। সকলের সব অনুরোধ ফিরিয়ে মঞ্চের আলো থেকে সরে যান তিনি। স্বেচ্ছায়। আমরা বাঙালিরা সুচিত্রা সেনের অবসর নিয়ে কথা বলি; বিনোদিনীর নিজেকে সরিয়ে নেওয়া আমাদের কাছে উপেক্ষিত।
এক অদ্ভুত জীবন।
পতিতাপল্লী থেকে উঠে এসে গিরিশ ঘোষের প্রিয়তমা শিষ্যা, বঙ্গরঙ্গমঞ্চের সম্রাজ্ঞী।
প্রবল সামাজিক প্রতিকূলতা উড়িয়ে স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণ যাঁর অভিনীত নিমাই চরিত্রটি দেখে বলেছিলেন,” আসল নকল একাকার।” সেটা ছিল 21 সেপ্টেম্বর 1884. নাটক: চৈতন্যলীলা। নাটক দেখার পর আলাদা করে বিনোদিনীর সঙ্গে দেখা করে গেছিলেন ঠাকুর। তারপর একাধিকবার যোগাযোগ।
পরে, মৃত্যুপথযাত্রী শ্রীরামকৃষ্ণ যখন শ্যামপুকুরের বাড়িতে, প্রবেশের কড়াকড়ি এড়াতে ছদ্মবেশে কোট প্যান্ট টুপিতে পুরুষ সেজে একটিবার দেখতে গেছিলেন বিনোদিনী। সঙ্গে কালীপদ ঘোষ।
কেউ চিনতে না পারলেও ঠাকুর একবারেই দেখে চিনতে পেরে কাছে ডেকে বলেছিলেন,” মা তোর চৈতন্য হোক।”
সেদিনই বোধহয় মন ঠিক করে নেন ঠাকুর চলে গেলে তিনিও নিজেকে সরিয়ে নেবেন মঞ্চ থেকে।
25 ডিসেম্বর তাই নটি বিনোদিনীর শেষ অভিনয়।
একসময় স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর নিজের নামে মঞ্চ হবে। গিরিশবাবুর থিয়েটারকে বাঁচাতে এবং নিজের নামের মঞ্চের প্রতিশ্রুতির উত্তেজনায় তিনি নিজেকে সঁপে দিয়েছিলেন গুর্মুখ রায়ের হাতে। নতুন হল হয়েছিল বটে। কিন্তু তখন বিনোদিনীকে শুনতে হয়েছিল পতিতার নামে থিয়েটার হলে সাধারণ দর্শক আসবে না। তাই বিনোদিনী থিয়েটার থেকে গেছিল তাঁর কল্পনাতেই।
তখনকার সমাজ, গিরিশ ঘোষের সাহস, শ্রীরামকৃষ্ণের আশীর্বাদ, বিবেকানন্দের উৎসাহ, পতিতাপল্লী থেকে আসা ব্যক্তিগত জীবনের ভাঙাগড়ার সঙ্গে যুদ্ধ করে মঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা, থিয়েটার বাঁচাতে আত্মত্যাগ ও বঞ্চনার যন্ত্রণা – বিনোদিনী সব মিলিয়ে হয়ে উঠেছেন বাংলা অভিনয়জগতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ চরিত্র।
In stock
Original price was: ₹300.00.₹270.00Current price is: ₹270.00.
Additional information
Weight | 500 g |
---|
Only logged in customers who have purchased this product may leave a review.
Reviews
There are no reviews yet.